একটি ডোবায় বাস করতো একটি বোয়াল মাছ, একটি কচ্ছপ ও একটি কাতাল মাছ। এদের তিন জনের মধ্যে ছিল গলায় গলায় ভাব। এই তিন বন্ধুর মধ্যে বিভিন্ন বুদ্ধিতে...
একটি ডোবায় বাস করতো একটি বোয়াল মাছ, একটি কচ্ছপ ও একটি কাতাল মাছ। এদের তিন জনের মধ্যে ছিল গলায় গলায় ভাব। এই তিন বন্ধুর মধ্যে বিভিন্ন বুদ্ধিতে পারঙ্গম ছিল কচ্ছপ। আর বোয়াল মাছটি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী। কাতাল মাছটি ছিল সবচেয়ে কমবুদ্ধি সম্পন্ন।।
একদিন গ্রামবাসীরা ঐ ডোবাটির পানি তুলে মাছ ধরার প্রস্তুতি নিল। প্রস্তুতি অনুসারে গ্রামবাসীরা সবাই মিলে ঐ ডোবাটির পানি তুলতে লাগলো। পানি যতই কমতে লাগলো ততই তিন বন্ধুর মধ্যে ছটফটানি শুরু হলো।কে কিভাবে পালাবে সেইজন্য যে যার মতো বুদ্ধি বের করতে লাগলো।
কচ্ছপটি বললো আমার কোন চিন্তা নেই।পানি শুকাতে শুকাতে আমি মাটির ভিতর ঢুকে যাবো। আমাকে আর কেউ খুঁজে পাবে না। বোয়াল মাছটি তার শক্তির জাহির করে বললো গ্রামবাসীরা যে বাধ দিয়েছে আমার শক্তির জোরে সেই বাধটি ভেঙ্গে বের হয়ে যাবো। এদিকে কাতাল মাছটির অতিরিক্ত কোন শক্তি কিংবা বুদ্ধি নেই। ফলে সে চুপচাপ থাকলো।
পানি তুলতে তুলতে এক পর্যায়ে পানি একেবারের শুকিয়ে গেলো। এখন গ্রামবাসীরা মাছ ধরতে ডোবায় নামলো। কচ্ছপটি ইতিমধ্যে মাটির ভিতর ঢুকে গেলো। আর বোয়াল মাছটি পালানোর চেষ্টায় বাধটি ভেঙ্গে যাওয়ার জন্য বার বার চেষ্টা করছিল। কিন্তু কিছুতেই পারলো না। এক পর্যায়ে গ্রামবাসীরা লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলো। এতে বোয়াল মাছটি মরে গেলো।
এদিকে কাতাল মাছটি কোন উপায় না দেখে মনে মনে একটি উপায় বের করলো। সে স্থির করলো এক লাফে বাধ ডিঙিয়ে চলে যাবে নদীতে। যেমন ভাবা তেমন কাজ। এক লাফে সে বাধের বাইরে বেরিয়ে নদীতে গড়িয়ে পড়লো। সে ধরা পড়ার হাত থেকে বেঁচে গেলো।
আর এদিকে কচ্ছপটি মাটির ভিতর ঢুকে পড়েছে সেটা যখন গ্রামবাসীরা বুঝতে পারলো তখনই খোঁজাখুঁজি আরম্ভ করে দিলো। শেষ পর্যন্ত গ্রামবাসীদের হাতে কচ্ছপটি ধরা পড়লো। বুদ্ধি বেশি থাকার পরও সে আর বাঁচতে পারলো না। গ্রামবাসীরা তাকে গলায় দড়ি বেধে নিয়ে গেলো। গল্পটি এখানেই শেষ।
এ গল্পের নীতিকথা হলো-
বেশি বুদ্ধির জোর যে দেখায় তার গলায় দড়ি জুটার সম্ভাবনা থাকে, বেশি শক্তির জোর যে দেখাবে তার মাথা ভাঙবে এবং একটা বুদ্ধিতে যে অতল থাকতে পারবে সে বিপদে পড়লেও উদ্ধার হতে পারবে।
সূত্র: সংগ্রহীত
COMMENTS